বিবেক কাকে বলে

পবিত্র কোরআন শরীফের প্রথম সূরা ফাতিহা। ফাতিহা আরবি শব্দের বাংলা অর্থ হলো সূচনা বা শুরু করা, প্রারম্ভিকা। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য যেকোনো সূরা পড়ার আগে এটি পাঠ করতে হয় অর্থাৎ এর মানে হলো প্রত্যেক নামাজ শুরুর আগে এটি প্রথম পাঠ করে অন্যান্য সূরা পাঠ করতে হয়।
সূরা ফাতিহার অর্থ ও ফজিলত
সুরা ফাতিহা হচ্ছেএমন একটি সুরা যখন কোন ব্যক্তি নামাজে এর একটি করে আয়াত পড়তে থাকে আল্লাহ পাক রব্বুল আলামিন সঙ্গে সঙ্গে সেই আয়াতের জবাব দিয়ে থাকেন। এই সূরার মাধ্যমে আল্লাহপাক বান্দাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা করেছেন।
বাংলা উচ্চারণ :
আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন।
আর রাহমানির রাহিম
মালিকি ইয়াওমিদ্দিন
ইয়্যাকা নাবুদু ওয়া ইয়্যাকা নাস্তায়িন
ইহদিনাছ ছিরাতল মুস্তাকিম, ছিরাতল্লাজিনা আনআমতা আলাইহিম, গয়রিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ্দল্লিন।
৭.যারা (তোমার) রোষে পতিত হয়নি, পথভ্রষ্ট হয়নি।
সুরা ফাতেহা মোট সাতটি আয়াতের মধ্যে প্রথম তিনটি আয়াতের রয়েছে একমাত্র আল্লাহর পরিচয়। এবং শেষ তিনটি আয়াতে বলা হয়েছে বান্দার প্রার্থনা ও আল্লাহর নিকট।
মহান আল্লাহর পরিচয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে তিনি পরম করুণাময় পরম দয়ালু তিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক। এবং বান্দাদের মাফ করে দেয়ার চূড়ান্ত অধিকারী। তিনি সৃষ্টি জগতের প্রভু তিনি বান্দাদের দয়ার বর্ষণ একমাত্র পালনকর্তা ত্রাণকর্তা।
সূরা ফাতিহা অর্থ এবং ফজিলত
পবিত্র সূরা ফাতেহার শেষে তিন আয়াতের প্রথম দিকে সরল পথ নির্দেশ চাচ্ছি এবং বান্দাকে যেন সহজ এবং সরল করে দেয়। আমাদের প্রিয় নবী এবং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যে পথ নির্দেশিত করেছেন প্রায় একমাত্র বান্দাদের প্রত্যাশা এবং রাসূলদের নির্দেশ অনুযায়ী বান্দারা যেন চলতে পারে। তিনি ছাড়া আমাদের আর কোন উত্তম নির্দেশনা নেই।
নামাজের জন্য প্রথমে সূরাটি পড়তে হয়
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সূরা ফাতিহার পঞ্চমা আয়াতে বলেছেন বান্দারা তোমরা নিশ্চয়ই সঠিক পথ এবং সরল পথ নির্দেশিত হবে। এর পরের কথা কি পরপর দুই আয়াতের মধ্যে বর্ণনা করা হয়েছে সাথে বান্দারা পথভ্রষ্ট এবং সহজ সরল উত্তম পথের অধিকারী হয়।
প্রথমদিকে আল্লাহর পরিচয় প্রথম অংশে তুলে ধরা হয়েছে। অপরদিকে মাঝখানে বান্দাদের কথা বলা হয়েছে। এবং বলা হয়েছে যে একমাত্র বান্দারা ইবাদত করবে মহান আল্লাহর রব্বুল আলামীনের দরবারে যাতে আমাদের প্রিয় নবী ও মহান আল্লাহ তাআলা সন্তুষ্ট হয়। এবং আর এক আয়াতে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে আল্লাহ এবং বান্দাদের জন্য সম্পর্ক বিদ্যমান থাকে।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম একদল সাহাবী কে একটি সামরিক অভিযানে পাঠালেন। সেই পথ ছিল দীর্ঘদিনের। সাবিরা হাঁটতে হাঁটতে একটি লোকালয় খুঁজে পেল। সাবিরা ভাবলেন কিছুদিন এখানে বিশ্রাম নেয়া যাক। লোকালাই অঞ্চলে সেই মানুষগুলো সাহাবীদের কখনো ভালো চোখে দেখলো না। সাহাবীদের কোন সাহায্য করল না এবং লোকালায় মানুষগুলো সাহাবীদের উপর অমানবিক আচরণ করল। তাই সাহাবীরা সিদ্ধান্ত নিলে এখানে এক রাতের বেশি থাকা যাবে না। রাতে ঘুমানোর পর ভাবলেন সূর্য উদয়ের আগে এখান থেকে রহনা দিতে হবে।
সেই রাতে লোকালয়ের গোত্রপ্রধানকে এক বিষাক্ত সাপে কামড় দিল। লোকালয়ের চিকিৎসকেরা হাজার চেষ্টা করেও বিষ নামাতে পারল না। বিষ নামানো না গেলে মৃত্যু নিশ্চিত। এবার লোকজন বাধ্য হয়ে নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম সাহাবীদের কাছে এসে বললেন আপনাদের মধ্যে এমন কেউ আছে যে বিষাক্ত সাপের বিষ নামাতে পারে। আমাদের দলের নেতাকে সাপে দংশন করেছে।
সূরা ফাতেহার ফজিলত।
একজন সাহাবি দ্রুত উঠে পড়লেন এবং বললেন আমরা আপনাদের কাছে ভালো আচরণ পাইনি তবুও চেষ্টা করে দেখতে পারি যদি তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন, তবে এর বিনিময় কি হবে বলেন।
তারপর অনেক লোকেরা বলেন যে আমাদের মহান নেতা হযরত মুহাম্মদকে যিনি সুস্থ করতে পারবেন তার জন্য উত্তম পুরস্কার হচ্ছে ৩০ টি বকরি পুরস্কৃত করা হবে।
সাহাবিরা রাজি হলেন। তাঁরা দলনেতার পাশে গিয়ে সুরা ফাতিহা তিলাওয়াত করা শুরু করলেন: ‘সব প্রশংসা শুধু আল্লাহর, যিনি জগৎসমূহ প্রতিপালন করেন। যিনি দয়াময় ও পরম দয়ালু। যিনি বিচার দিবসের মালিক। আমরা শুধু আপনারই ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই। আপনি আমাদের সরল সঠিক পথ দেখান। তাদের পথ, যাদের আপনি অনুগ্রহ করেছেন। তবে তাদের পথে নয়, যাদের প্রতি আপনার শাস্তি বর্ষিত হয়েছে, যারা পথভ্রষ্ট। আমিন।
রোজা মনি
Comments
Post a Comment