বিবেক কাকে বলে

রোজাদারের দিন কীভাবে কাটবে
পবিত্র মাহে রমজান হচ্ছে মুসলমানদের জন্য অন্যতম একটি প্রশিক্ষণকাল। মুসলমানদের পূর্ণময় জীবনে মাহে রমজান হচ্ছে অন্যতম মাস। পবিত্র মাহে রমজানে একজন রোজাদারের রোজ নামচা কেমন হতে পারে তার সংক্ষেপে ধারণা দেয়া হলো।
সকাল
আজানের জবাব: একজন মুমিনের দৈনন্দিন জীবন শুরু হয় ফজরের আজান শুনে। সে প্রথমেই আজানের উত্তর দেয় এবং আজানের দোয়া পাঠ করে। আজানের উত্তর প্রদানকারীর ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন কিয়ামতের দিন ওই ব্যক্তি আমার সুপারিশ লাভ করবে। সে সহিহ বুখারি হাদিস : ৬১৪
ফজরের সুন্নত: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ফজরের দুই রাকাত সুন্নত দুনিয়া ও তার মধ্যে যা আছে তা থেকে উত্তম।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৭২৫)
জামাতে ফজর নামাজ আদায়: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘রাতের আঁধারে মসজিদে আগমনকারীদের কিয়ামতের দিন পূর্ণ আলো লাভের সুসংবাদ দাও।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস: ৫৬১)
জিকির ও তাসবিহ পাঠ: ফজরের নামাজের পর পুরুষেরা মসজিদে এবং নারীরা জায়নামাজে বসে জিকির, তিলাওয়াত ও তাসবিহ পাঠ করবেন। কেননা ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ফজর নামাজ শেষে সূর্য পরিপূর্ণ উদিত হওয়া পর্যন্ত বসে থাকতেন।’ (সুনানে আবি দাউদ)
দান করা: প্রতিদিন সকালে ফেরেশতারা দানকারীর জন্য দোয়া করে। তাই দানের মাধ্যমে দিন শুরু করা যেতে পারে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে দুজন ফেরেশতা অবতরণ করেন। তাঁদের একজন বলেন, হে আল্লাহ যিনি দান করেন সেই দাদাকে তুমি উত্তম প্রতিদান দিন আর কৃপণ কে ধ্বংস করে দেন।বুখারি হাদিস : ১৪৪২
দুপুর
হালাল জীবিকা: এক একজন মানুষের একেক রকম উপার্জন। কোন ব্যক্তি উপার্জন হয় হালাল আবার কোন ব্যক্তির উপার্জন হয় হারাম। পবিত্র মাহে রমজানে যারা হারাম উপার্জন করে তারা ওই পথ থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করুন। আমাদের প্রিয় নবী হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি হালাল উপার্জনের মাধ্যমে পথ চলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের পথ সহজ করে দিয়েছেন।
জোহরের নামাজের প্রস্তুতি: আজানের উত্তর দেওয়া, নামাজের প্রস্তুতি নেওয়া ও জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করা।
বিকেল
আসরের নামাজ: প্রত্যেক ব্যক্তিকে জামাতের নামাজ আদায় করা একান্ত কর্তব্য।
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা: বলেছেন পবিত্র মাহে রমজান মাসে প্রতিরাতে জিবরাঈল আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর কাছে উপস্থিত হতেন। তারা একে অপরের সঙ্গে কোরান তিলাওয়াত করতেন ।বুখারি হাদিস : ৬
ইফতারের আগে রোজাদার ব্যক্তির দোয়া আল্লাহ কবুল করেন। আমাদের প্রিয় নবী হযরত সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন তিন ব্যক্তির দোয়া কখনো ফিরিয়ে দেয়া হয় না। প্রথম ব্যক্তি হচ্ছে ন্যায় পরায়ণ শাসক। দ্বিতীয় ব্যক্তি হচ্ছে রোজাদার ব্যক্তি তৃতীয় নাম্বার ব্যক্তি হচ্ছেন অত্যাচারিত ব্যক্তির দোয়া। সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস: ১৭৫২
রাত
মাগরিবের নামাজের প্রস্তুতি: জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়।
পরিবারে ধর্মচর্চা: পরিবারের সবার খোঁজখবর নেওয়া। ধর্ম বিষয়ে আলোচনা করা বা কোনো বই পড়া। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি উপদেশ দিতে থাক। কেননা উপদেশ মুমিনদেরই উপকারে আসে। সুরা জারিয়াত, আয়াত: ৫৫
এশার নামাজের প্রস্তুতি: রাসুলুল্লাহ বলেন, ‘যদি কোনো ব্যক্তি ঘরে পবিত্রতা অর্জন করে এবং পায়ে হেঁটে কোনো মসজিদে ফরজ নামাজ আদায়ের জন্য যায়, তাহলে তার এক পদক্ষেপে একটি পাপ মার্জনা হয় এবং অপর পদক্ষেপে একটি মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। সহিহ মুসলিম হাদিস: ৬৬৬
এশার নামাজের প্রস্তুতি: আজানের উত্তর দেওয়া, জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় এবং এশার সুন্নত নামাজ পড়া।
জামাতের সঙ্গে তারাবির নামাজ আদায়: মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে তারাবির নামাজ আদায় করে ঘরে ফেরে, আল্লাহ তার জন্য পূর্ণ রাত নামাজ আদায় করার সওয়াব লিখে রাখেন। সুনানে নাসায়ি হাদিস ১৬০৫
তাহাজ্জুদ আদায় ও সাহ্রি খাওয়া: রমজান মাসে তাহাজ্জুদ পড়ার বিশেষ সুযোগ থাকে। আর সাহ্রি খাওয়া সুন্নত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা সাহ্রি খাও। কেননা সাহ্রিতে বরকত রয়েছে। সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৯২৩
Islamicroja
Comments
Post a Comment